“তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যই থাকতে হবে। যারা কল্যাণ ও মঙ্গঁলের দিকে ডাকবে ন্যায় ও সৎকাজের নির্দেশ দিবে এবং অন্যায় ও পাপ কাজ হতে বিরত রাখবে। যারা এ কাজ করবে তারাই কৃতকার্য হবে। ”(সূরা : আলে ইমরান ঃ আয়াত : ১০৪)
নম্রতা ও ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন কর, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ লোকদের এড়িয়ে চল। (সূরা : আ’রাফ ঃ আয়াত : ১৯৯)
স্পষ্টভাবে বলে দিন, এ মহাসত্য তোমাদের মহান প্রতিপালকের কাছ থেকে এসেছে, তাই যার ইচ্ছা মেনে নিবে আর যার ইচ্ছা অমান্য করবে; ‘আমি জালিমদের জন্য অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি, যার বেষ্টনী ওদের ঘিরে থাকবে; ওরা পানীয় চাইলে দেয়া হবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যা ওদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে।; কি ভীষণ সে পানীয়, আর কি নিকৃষ্ট সেই অগ্নিময় আরামের স্থান। (সূরা : কাহফ ঃ আয়াত : ২৯)
১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কেহ যখন কোন খারাপ কাজ হতে দেখে সে যেন তা হাত দিয়ে অথবা শক্তি প্রয়োগ করে বন্ধ করে দেয়। যদি সে এ ক্ষমতা না রাখে তবে যেন মুখের দ্বারা বন্ধ করে দেয়। যদি সে এ ক্ষমতাটুকুও না রাখে তবে যেন সে অন্তরের দ্বারা ঘৃণা করে। আর এটা হল ঈমানের দুর্বলতা এবং নি¤œতম স্তর। (মুসলিম শরীফ)
২. উম্মুল মু’মিনিন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের উপর কিছু শাসক নিযুক্ত করা হবে। তোমরা তাদের কিছু কার্যকলাপের সঙ্গে পরিচিত থাকবে আর কিছু কার্যকলাপ তোমাদের কাছে অপরিচিত মনে হবে। এরূপ অবস্থায় যে লোক এগুলোকে খারাপ জানবে সে দায়মুক্ত । আর যে লোক এর প্রতিবাদ করবে সে নিরাপদ। কিন্তু যে লোক এরূপ কাজের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করল এবং এর সঙ্গে সহযোগীতা করল। সাহাবা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করব না ? তিনি বললেন না, যত সময় তারা নামায কায়েম করে। (মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, একবার রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক লোকের হাতে একটি সোনার আংটি দেখতে পেলেন। তিনি আংটিটি তার হাত থেকে খুলে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তোমাদের মধ্যে কেহ কি নিজের হাতে জলন্ত অঙ্গার রাখতে পছন্দ করে ? রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখান হতে চলে যাওয়ার পর লোকটিকে বলা হল, আংটিটি উঠিয়ে নিয়ে অন্য কোন কাজে লাগাও। সে বলল, মহান আল্লাহর কসম! যে জিনিসটি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামছুড়ে ফেলে দিয়েছেন আমি তা কখনও নেবনা। (মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা রাস্তার উপর বসা হতে বিরত থাক। সাহাবা কেরাম (রাঃ) বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রাস্তায় বসা ছাড়া তো আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা সেখানে বসে আলাপ-আলোচনা করে থাকি। রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা রাস্তায় বসা হতে বিরত থাকতে অস্বীকার করছ, তাহলে রাস্তার হক আদায় কর। তারা বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রাস্তার হক আবার কি? তিনি বললেন, রাস্তার হক হল, নিজের দৃষ্টি সংযত রাখা, কষ্টদায়ক বস্তু দুর করা, সালামের জবাব দেয়া, সৎকাজের জন্য নির্দেশ দেয়া এবং অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখা। ( বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৫. হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জালিম ও স্বৈরাচারী শাসকের সামনে ন্যায় ও ইনসাফ পূর্ণ কথা বলাই উত্তম জিহাদ। ( আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফ)
৬. হযরত আবু আবদুল্লাহ্ তারিক ইবন শিহাব (রাঃ) হতে বর্ণিত, একলোক রসুলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এমন সময় প্রশ্ন করল, যখন তিনি সওয়ারীর রেকাবে পা রাখছিলেন মাত্র, সর্বোত্তম জিহাদ কোনটি ? তিনি বললেন, স্বৈরাচারী যালিম শাসকের সামনে হক (সত্য) কথা বলা সর্বোত্তম জিহাদ। (নাসাঈ শরীফ)
Leave a Reply